নেত্রকোনার দুটি উপজেলায় বজ্রপাতে দুর্ঘটনায় একজন মাদ্রাসার শিক্ষক ও একজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এবং গতকাল রোববার রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নেত্রকোনার দুটি উপজেলায় বজ্রপাতে দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে একজন মাদ্রাসার শিক্ষক এবং অপরজন একজন শিশু। ঘটনাটি গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এবং আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ঘটে।
শিশু আরাফাতের মৃত্যু (তিয়শ্রী উপজেলা):
আজ ভোরে তিয়শ্রী উপজেলার তিয়শ্রী গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় শিশু আরাফাতের। আরাফাত (১০) তিয়শ্রী গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে। তিনি বাড়ির পাশের একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। প্রতিদিনের মতো আজ ফজরের নামাজ শেষে মা-বাবাকে বলে মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন আরাফাত। মাদ্রাসার পাশে পৌঁছানোর পর হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তাঁর।মাদ্রাসার শিক্ষক দিদারুল হকের মৃত্যু (খারনৈ উপজেলা):
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে খারনৈ উপজেলার হাফসা (রা.) মহিলা মাদ্রাসা ও আন নূর ইসলামি একাডেমির সামনে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় দিদারুল হকের। দিদারুল হক (২৫) নাজিরপুর ইউনিয়নের ধুনন্দ গ্রামের মধ্যপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি হাফসা (রা.) মহিলা মাদ্রাসা ও আন নূর ইসলামি একাডেমির শিক্ষক ছিলেন। তিনি বাজার থেকে মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন, এ সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয়রা জানান, বজ্রপাতের শব্দ শুনতে পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। শিক্ষক দিদারুল হকের নিথর দেহ মাদ্রাসার মাঠে পড়ে থাকতে দেখেন মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় পল্লিচিকিৎসক এসে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশু আরাফাতের মৃত্যুর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোতাহার হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অলিদুজ্জামান বলেন, "আরাফাত নামে এক মাদ্রাসাশিক্ষার্থী বজ্রপাতে মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।"
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন জানান, "বজ্রপাতে দিদারুল হক নামে একজন মাদ্রাসার শিক্ষকের মৃত্যু হয়। স্থানীয়ভাবে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ রাতেই তাঁর স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।"
বজ্রপাতের মৌসুমে স্থানীয় প্রশাসন এবং আবহাওয়া অধিদফতর সাবধানতার আহ্বান জানিয়েছেন। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গায় থাকা এবং উচ্চ গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।