ময়মনসিংহ শহরে আসা-যাওয়া এবং থাকাকালীন কিছু সতর্কতা
ছোট-বড়-সমবয়সী অনেকের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাগুলো থেকে কিছু ব্যাপারে সতর্কতাবার্তা লিখলাম। লিখাটা অনেক বড় হলেও, আশাবাদী সবটুকু পড়বেন এবং ম...
https://www.fulbariatoday.com/2018/03/Some-alerts-in-the-city-of-mymensingh.html
ছোট-বড়-সমবয়সী অনেকের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাগুলো থেকে কিছু ব্যাপারে সতর্কতাবার্তা লিখলাম। লিখাটা অনেক বড় হলেও, আশাবাদী সবটুকু পড়বেন এবং মেনে চলবেন।
আপনি নিজের অবস্থানে ভালো এবং সতর্ক হলে, দেশটাও ভালো থাকবে।
আপনি নিজের অবস্থানে ভালো এবং সতর্ক হলে, দেশটাও ভালো থাকবে।
**************০১. যাত্রাপথে-
ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, নান্দাইল ও ঈশ্বরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গা থেকে ময়মনসিংহ আসার সময় সময় বাসের হেল্পারদের সাথে সভ্য আচরণ করুন। এরা যতই খারাপ আচরণ করুক না কেন, আপনি আপনার সভ্যতার পরিচয় দিন। দশটাকা বেশি গেলেও আপনার আত্মসম্মান নষ্ট হবে না। কারণ কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ মহাসড়কে হেল্পারদের বেশির ভাগই অশিক্ষিত এবং ঝগড়াপ্রিয় হয়। এরা অনেক সময় ব্রীজে বিভিন্ন লোক দিয়ে আপনার গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বা টাকা হাঁতিয়ে নিতে পারে।
সিএনজি চালিত ত্রি-চক্রযান (সিএনজি) দিয়ে আসার সময় সবসময় নির্ধারিত ভাড়া দিয়ে আসুন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান, উপলক্ষ্য কিংবা হরতাল/মিছিলকে কেন্দ্র করে এরা অনেক বেশি টাকা দাবি করে। ভুলেও বেশি টাকা দিয়ে আসা যাওয়া করবেন না। দিনদিন যে হারে সিএনজিওয়ালাদের দৌরাত্ম বাড়ছে, তাতে অবস্থা বেগতিক। এরা মানুষকে চাপের মধ্যে ফেলে মাত্রারিক্ত ভাড়া আদায় করে। এটা এখন এদের নিয়মিত অভ্যাস হয়ে গেছে। আমি মনে করি এটা নিয়ে সাংবাদিকদের লেখালেখি করা উচিত।
নান্দাইল চৌরাস্তায় রাতে সিএনজিতে উঠার ক্ষেত্রে আশে পাশে তাকিয়ে দেখুন ঠিক রাস্তায় যাচ্ছেন কিনা। যদি আপনি প্রথম গিয়ে থাকেন, তাহলে আগে-ভাগে রাস্তা সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিন। এতে আপনার টাকা এবং জীবন দুটোই বাঁচবে।
**************০২. ময়মনসিংহ ব্রীজ বাসস্ট্যান্ডে
বাস থেকে নামার পরপরই কেউ আপনাকে ডাক দিতে পারে, কোথায় যাবেন জিজ্ঞেস করতে পারে। এগুলো এড়িয়ে চলুন। এদের বেশিরভাগই ছিনতাইকারী হয়। এরা আপনাকে ডাক দিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে একটা ঝগড়া বা কথা কাটাকাটির পরিবেশ তৈরী করতে চাইবে অথবা ভয় দেখাবে। এরপর সাথে সাথে দেখবেন কয়েকজন এসে আপনাকে ঘিরে ফেলছে। কেউ ঝগড়াতে বাধা দিয়ে আপনার পক্ষ নিবে। কিন্তু এরকমটা করতে করতে ভিতর থেকেই আপনার টাকা বা ব্যাগ হাঁতিয়ে নিতে পারে। অনেক সময় সরসারি টাকা দাবি করতে পারে। তাই এসব ব্যাপারে সতর্ক থাকুন এবং পাকা রাস্তার বামপাশ ধরে সতর্কভাবে পথ চলুন। খুব ভোরে বা শেষ রাতে শূণ্য অটো-রিক্সায় একা উঠবেন না। তাহলে আপনার কারবার শেষ। তাই মোবাইল, টাকা এবং ব্যাগ নিয়ে সতর্ক থাকুন।
অনেক সময় বাসের ছোট ছোট হেল্পার ছেলেরা ব্যাগ ধরে টানাটানি করে , তাদের বাসে উঠার জন্য। ব্যাগ ধরে যাতে কোন টানাটানি না করে সতর্ক থাকুন।
বাসে বা যেকোন যানবাহনে ধুমপান করা সম্পূর্ণ নিষেধ এবং আইনত দন্ডনীয়। কেউ যদি তা করে বা করতে চায়, নিষেধ করুন। যদি না মানে আইনের হুমকি দিতে পারেন। এরা সাধারণত বাস বা যানবাহনকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে। এক্ষেত্রে ছবি তুলে আগেই প্রমাণ নিন। ফেইসবুকতো আছেই। বাসের কন্ডাক্টর’কে জানান। ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, যদি না নেয় তাহলে তাকেও বুঝিয়ে বলুন।
প্রকৃতির কাজ (প্রশ্রাব/টয়লেট) এর প্রয়োজন পড়লে, যেখানে সেখানে চলে যাবেন না। ব্রীজের কাছের মসজিদ ও তার পাশে এবং ব্রীজ মোড়ের মসজিদেও টয়লেটের ব্যবস্থা আছে। সেখানে ২ বা ৫ টাকা খরচ করে নিরাপদে কাজ সারুন।
মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হবেন না অথবা রাস্তায় হাঁটবেন না। কখন যে আপনার মোবাইলটা উধাও হয়ে যাবে খেয়ালও করতে পারবেন না।
********************০৩. ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন স্টেশনেঃ
প্রথমেই বলব প্লাটফরম ছেড়ে দুরে কোথাও না যাওয়াই ভালো (যদি আপনি নতুন হোন।) পুরোনো ট্রেনগুলোর চিপায় গিয়ে প্রশ্রাব করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ ওখানে গেলেন মানে ধরা খেলেন। ছিনতাইকারীরা আপনার সবকিছু নিয়ে যাবে। ওরা ওখানে বেশিরভাগ সময়ই ওৎ পেতে থাকে। প্রকৃতির কাজ (প্রশ্রাব/টয়লেট) করার জন্য স্টেশনের বাহিরে (স্টেশন রোডের দিকে) এক কোণায় পাবলিক টয়লেট (গণ শৌচাগার) দেখতে পাবেন। ওখানে ৫-১০ টাকা দিয়ে কাজ সারতে পারেন। এতে ৫-১০ টাকা খরচ হলেও আপনার নিরাপত্তা থাকবে। স্টেশনে পানি খাওয়ার সুন্দর ব্যবস্থা আছে।
দ্বিতীয়ত বলব অবৈধ উপায়ে টিকিট কাটবেন না। এতে আপনারও ক্ষতি, দেশেরও ক্ষতি। ট্রেন আসার পরপরই দেখবেন ট্রেনের গার্ডরা আপনাকে জিজ্ঞেস করবে- কোথায় যাবেন না যাবেন। ওরা আপনাকে সিট দিতে চাইবে। আপনি চাইলে দিবেও। বিনিময়ে আপনার কাছে টিকিটের মুল্য নিবে। এই টাকাটা সরকার/জনগণ পাবে না। সম্পূর্ণ ওদের ভোগে যাবে। বরং আপনার কোন নিরাপত্তা থাকবে না। মনে রাখবেন, ট্রেনের মালিক সরকার/জনগণ, কিন্তু সে নয়। তাই সে কোন ভাবে টাকা নিতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনী। আপনি আপনার একটু সুবিধার জন্য অবৈধ কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন, দশটাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করলে আপনি একজনের কাছে দায়ী থাকবেন, আর ট্রেনের টিকিট না কাটলে কিংবা অবৈধ উপায় অবলম্বন করলে আপনি ১৬ কোটি মানুষের কাছে দায়ী থাকবেন। শেষবিচারের দিনের কথা ভুলে যাবেন না। টিকিট না করলে, কিংবা গার্ডকে টাকা দিয়ে টিকিট বিহীন ট্রেনে উঠলে টিটি এসে আপনার কাছে টিকিট চাইলে আপনি বিপদে পড়বেন। তাই গার্ডরা/পুলিশ টাকা চাইলে ভুলেও টাকা দিবেন না, হোক সেটা ট্রেনে উঠার আগে কিংবা পরে। এদেরকে ভয় পাবার কিছু নেই। মনে রাখবেন, কমলাপুর স্টেশনে টিকিট যাচাই করা হয়।
মনে রাখবেন, সরকারি কোন কাজে টাকা-পয়সা আদান-প্রদানে লিখিত কাগজ/রশিদ/টিকিট খুব জরুরী। এটাই আপনার প্রমাণপত্র।
অনেক সময় টিকিট কাউন্টারেও সিট দেয়ার কথা বলে অতিরিক্ত টাকা চেযে বসে। ভুলেও টাকা দিবেন না। টিকিটে যত মুল্য লেখা থাকে তা দিন। আর বর্তমানে কাউন্টারে এলসিডি পর্দায় শূন্য সিটের সংখ্যা দেখা যায়।
আরেকটা কথা, লাইনে দাড়িয়ে সময় নিয়ে টিকিট কাটুন, দাপট দেখাবেন না।
********০৪. ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চড়পাড়া)
বর্তমানে ময়মনসিংহ হাসপাতাল প্রায় সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত এবং নিরাপদ। এটা খুবই আনন্দের বিষয়। দেশর বিভিন্ন প্রান্ত হতে এখানে চিকিৎসা নেয়ার জন্য মানুষ আসেন এবং সেবা নেওয়ার জন্য বিপুল টাকার প্রয়োজন হয়। আর বলতে গেলে সবার সাথেই অনেক বেশি টাকা থাকে, অনেক সময় জমি বিক্রির টাকাও থাকে। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে কিছু নেশাকারী আর ছিনতাইকারী ছিনতাই করার চেষ্টা করে। তাই সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী এবং খাবারগুলো সময় থাকতেই কিনে নিন। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেউ টাকা চাইলে কিংবা ভয় দেখালে ভয় পাবেন না। এরা কিছুই করতে পারবে না। বরং আপনি অপরিচিত বলে, ওখানে নতুন বলে- আপনার ভয়টাকে কাজে লাগাতে চাইবে। রাতের বেলায় অতি প্রয়োজনে বের হতে হলে, শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় টাকাটুকু নিয়ে বের হোন অবশ্যই একা বের না হওয়াই ভালো।
আরেকটা কথা, হাসপাতালের ভিতর অতিদ্রুত কিংবা আগে কাজ/পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নেয়ার জন্য কাউকে টাকা সাধাসাধি করবেন না। তাহলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা আপনরই বেশি। এখানে সবাই চিকিৎসার জন্য আসে, তাই সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন।
প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে নার্স হিসেবে যারা থাকে, গিয়েই তাদের খোঁজ নিন। তারা তাদের কাজে কতটুকু দক্ষ সেটা সম্পর্কে অন্যান্য রোগী এবং তাদের লোকদের থেকে খোঁজ নিন। কেননা অনেক সময় অদক্ষ নার্স এর কারণে আপনার রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
ওভারব্রীজ ব্যবহার করুন। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হবেন না। রোগীর সেবা করতে এসে নিতে রোগী হবেন না।
হোঁটেলে খাওয়ার ক্ষেত্রে খাবারের দাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে নিন। আপনার এলাকায় যে খাবার বিশ টাকা, এখানে সেটা চল্লিশ টাকা হতে পারে। খাওয়ার পর টাকা নিয়ে তর্ক করলে লাভ নেই, বরং আপনার আত্মসম্মান নষ্ট হবে।
আরেকটা কথা, হাসপাতালের ভিতর অতিদ্রুত কিংবা আগে কাজ/পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নেয়ার জন্য কাউকে টাকা সাধাসাধি করবেন না। তাহলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা আপনরই বেশি। এখানে সবাই চিকিৎসার জন্য আসে, তাই সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন।
প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে নার্স হিসেবে যারা থাকে, গিয়েই তাদের খোঁজ নিন। তারা তাদের কাজে কতটুকু দক্ষ সেটা সম্পর্কে অন্যান্য রোগী এবং তাদের লোকদের থেকে খোঁজ নিন। কেননা অনেক সময় অদক্ষ নার্স এর কারণে আপনার রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
ওভারব্রীজ ব্যবহার করুন। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হবেন না। রোগীর সেবা করতে এসে নিতে রোগী হবেন না।
হোঁটেলে খাওয়ার ক্ষেত্রে খাবারের দাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে নিন। আপনার এলাকায় যে খাবার বিশ টাকা, এখানে সেটা চল্লিশ টাকা হতে পারে। খাওয়ার পর টাকা নিয়ে তর্ক করলে লাভ নেই, বরং আপনার আত্মসম্মান নষ্ট হবে।
**********০৫. জয়নুল আবেদীন পার্ক এবং বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় নদীর পাড় ও বোটানিক্যাল গার্ডেনঃ
এই জায়গাগুলোতে তেমন কোন সমস্যা হয় না। তবে নদীর ওপারে যেতে চাইলে সতর্কভাবে যাবেন। টাকা পয়সা মোবাইল সব সাবধানে রাখবেন। চিপায় গিয়ে বসা থেকে বিরত থাকুন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নৌকা দিয়ে পাড় হওয়ার সময় ভাড়া ঠিক করে তারপর নৌকায় উঠুন। অনথ্যায় মাঝি যে কি জিনিস টের পাবেন। নৌকা থেকে নামার সময় এত টাকা দাবি করবে যে, আপনি আকাশ থেকে পড়বেন। তাই আগেভাগে সাবধান। মাঝি কিন্তু মুখে ভালো এবং রসালো, কিন্তু ভাড়া না ঠিক করে গেলে মাঝি যে কত পাঁজি তা হারে হারে বুঝতে পারবেন। কারণ ওরা জানে, ঘুরতে এলে মানুষ কি পরিমাণ টাকা নিয়ে আসে। (রিক্সায় উঠার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।)
গাছের চামড়ায় বা কোন সুন্দর ফলের গায়ে কেটেকুটে-ছিড়েফেরে কিছু লিখালিখি না করাই ভালো। এতে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়।
০৬. নতুন ছাত্র যারা কলেজে/বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাও অথবা মেসে উঠতে চাওঃ
প্রথম কথা হলো, ময়মনসিংহ শহরের কলেজ বলেই যে খুব ভালো কলেজ হবে তা কিন্তু নয়। তাই যাচাই করে ভর্তি হবে। প্রয়োজনে ইন্টারনেট থেকে খোঁজ নিবে। কিছু কলেজ আছে যেগুলো ভর্তি হওয়া একদমই উচিত না। আমি সেগুলোর নাম বলতে চাই না।
মেসে উঠার ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক মেস গুলোতে না উঠাই ভালো। কারণ এসব মেসের মালিকগুলো হারামী ধরনের লোক হয়। রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখায় অনেকেই। ভালো মনে করেমেসে উঠলেও, কিছুদিন থাকার পর আর বের হতে পারবে না। এতে তোমাকে বিপদে পড়তে হতে পারে। এক্ষেত্রে মেসের ব্যাপারে ভালোভাবে খোঁজ নেয়া উচিত। কিছু কিছু মেসে বিভিন্ন অবৈধ রাজনৈতিক দলের ছেলেরা থাকে। ওগুলোতে না যাওয়াই ভালো। অথবা যে মেসে উঠতে চাচ্ছো সে মেসে এমন ধরনের কোন ঘটনা কখনও ঘটেছে কিনা সেটা নিশ্চিত করে মেসে উঠবে। অনেক সময় মেসের সমস্যার কারণে পড়াশোনায় মন দিতে পারবে না।
আরেকটা কথা, মেসে উঠার পর অকারণ বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি অপচয় করবে না। টাকা দাও বলেই যে ইচ্ছেমত বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি অপচয় করবে, তা কিন্তু নয়। অতিরিক্ত টাকা নেওয়াটা মালিকের দোষ, বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানির নয়। তাই বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া উচিত।
এই জায়গাগুলোতে তেমন কোন সমস্যা হয় না। তবে নদীর ওপারে যেতে চাইলে সতর্কভাবে যাবেন। টাকা পয়সা মোবাইল সব সাবধানে রাখবেন। চিপায় গিয়ে বসা থেকে বিরত থাকুন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নৌকা দিয়ে পাড় হওয়ার সময় ভাড়া ঠিক করে তারপর নৌকায় উঠুন। অনথ্যায় মাঝি যে কি জিনিস টের পাবেন। নৌকা থেকে নামার সময় এত টাকা দাবি করবে যে, আপনি আকাশ থেকে পড়বেন। তাই আগেভাগে সাবধান। মাঝি কিন্তু মুখে ভালো এবং রসালো, কিন্তু ভাড়া না ঠিক করে গেলে মাঝি যে কত পাঁজি তা হারে হারে বুঝতে পারবেন। কারণ ওরা জানে, ঘুরতে এলে মানুষ কি পরিমাণ টাকা নিয়ে আসে। (রিক্সায় উঠার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।)
গাছের চামড়ায় বা কোন সুন্দর ফলের গায়ে কেটেকুটে-ছিড়েফেরে কিছু লিখালিখি না করাই ভালো। এতে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়।
০৬. নতুন ছাত্র যারা কলেজে/বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাও অথবা মেসে উঠতে চাওঃ
প্রথম কথা হলো, ময়মনসিংহ শহরের কলেজ বলেই যে খুব ভালো কলেজ হবে তা কিন্তু নয়। তাই যাচাই করে ভর্তি হবে। প্রয়োজনে ইন্টারনেট থেকে খোঁজ নিবে। কিছু কলেজ আছে যেগুলো ভর্তি হওয়া একদমই উচিত না। আমি সেগুলোর নাম বলতে চাই না।
মেসে উঠার ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক মেস গুলোতে না উঠাই ভালো। কারণ এসব মেসের মালিকগুলো হারামী ধরনের লোক হয়। রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখায় অনেকেই। ভালো মনে করেমেসে উঠলেও, কিছুদিন থাকার পর আর বের হতে পারবে না। এতে তোমাকে বিপদে পড়তে হতে পারে। এক্ষেত্রে মেসের ব্যাপারে ভালোভাবে খোঁজ নেয়া উচিত। কিছু কিছু মেসে বিভিন্ন অবৈধ রাজনৈতিক দলের ছেলেরা থাকে। ওগুলোতে না যাওয়াই ভালো। অথবা যে মেসে উঠতে চাচ্ছো সে মেসে এমন ধরনের কোন ঘটনা কখনও ঘটেছে কিনা সেটা নিশ্চিত করে মেসে উঠবে। অনেক সময় মেসের সমস্যার কারণে পড়াশোনায় মন দিতে পারবে না।
আরেকটা কথা, মেসে উঠার পর অকারণ বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি অপচয় করবে না। টাকা দাও বলেই যে ইচ্ছেমত বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি অপচয় করবে, তা কিন্তু নয়। অতিরিক্ত টাকা নেওয়াটা মালিকের দোষ, বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানির নয়। তাই বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া উচিত।
********০৭.
ভাড়া জিজ্ঞেস না করলে অনেক সময় বেশি ভাড়া দিতে হবে, তখন মেজাজ খুব খারাপ হয়। তাই অটো-রিক্সার কিছু ভাড়ার তালিকা আমি দিয়ে দিচ্ছি...
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে চড়পাড়া মোড়/ ময়মনসিংহ হাসপাতাল ৫ টাকা (ময়নসিংহ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ১০টাকা দাবি করতে পারে। ভুলেও দিবেন না।)
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড ১০ টাকা (বেশি দাবি করলে ভুলেও দিবেন না।)
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে গাঙিনাপাড় ৫ টাকা
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে কোতয়ালী থানা/বিপিন পার্ক ৫ টাকা (বিপিন পার্কের একটু সামনেই সোনালী ব্যাংক, তারপরও ওখানে ভাড়া ১০ টাকা, অনেক সময় ৫ টাকাও নেয় ।)
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে টাউনহল/সোনালী ব্যাংক/কাচারী ১০ টাকা
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে পুলিশ লাইন/জেলখানা ১৫ টাকা
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে কেওয়াখালী/১ নং গেইট (ফার্স্ট গেট) ৫ টাকা
ময়নসিংহ ব্রীজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়/বোটানিক্যাল গার্ডেন/জব্বারের মোড় ১০ টাকা
আর নদী পাড়াপাড়ের ক্ষেত্রে জনপ্রতি প্রতিবারে ৫টাকা নেয়া হয়। অনেক সময় ১০টাকও নেয়া হয়। তবে ১০টাকার বেশি নয়। আর আপনি যদি চুক্তি করে যান, সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
সবমিলিয়ে ময়মনসিংহ শহরে আপনার চলাফেরা হোক নিরাপদ এবং আনন্দময়, এই প্রত্যাশা করি। ধন্যবাদ, ধৈর্য্যসহকারে পড়ার জন্য।
********
নোবেল