বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ২৭ এপ্রিল, রোববার ঘোষণা করেছে যে, ৮ মে অনুষ্ঠেয় ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যে পিএসসির সদস্য জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন। স্থগিতাদেশের পেছনে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের পিএসসি সংস্কারের আন্দোলন।
এই আন্দোলনের ফলে গত ৮০ ঘণ্টা ধরে অনশনরত তিন জন শিক্ষার্থীর অনশন প্রত্যাহার করা হয়েছে। অনশন ভাঙ্গানোর সময় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং পিএসসির সদস্যরা।
৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে চাকরিপ্রার্থীদের পিএসসি সংস্কারের দাবি উল্লেখ করা হয়েছে। এই দাবি নিয়ে গত কিছুদিন ধরে একদল চাকরিপ্রার্থী আন্দোলন করছিলেন। তাদের মূল দাবিগুলো হলো:
পিএসসি সংস্কার।
বিগত বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে তদন্ত ও ব্যবস্থা।
পরীক্ষার নির্ভুলতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা।
এই দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গত ২৪ এপ্রিল চার জন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শাহ আলম স্নেহ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আওরঙ্গজেব।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মো. সিরাজুস সালেহীন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী সাকির রাজু।
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর পিএসসি সদস্যরা ৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেন। অনশনরত শিক্ষার্থীরা তাদের অনশন প্রত্যাহার করে নেন। তবে তারা জানিয়েছেন যে, অনশন থেকে সরে আসলেও তারা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।
চাকরিপ্রার্থী আশিক বলেন, "আমাদের মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত নোটিশ দেওয়া হবে। আমরা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখব যতক্ষণ না আমাদের দাবি পূরণ হয়।"
অনশন ভাঙ্গানোর পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, "সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির মধ্যে রয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান। এই কমিটি বাকি দাবি পূরণে কাজ করবে। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরাও এই কমিটিতে থাকবেন।"
তিনি আরও বলেন, "আলোচনার মাধ্যমে স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে যথাযথ সংস্কার হবে। যেন অন্তত ২০-৩০ বছর স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত থাকে।"
জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, "বিগত বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে মামলা সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি।"